Artcell
Oniket Prantor
তবু এই দেয়ালের শরীরে
যত ছেঁড়া রং, ধুয়ে যাওয়া মানুষ
পেশাদার প্রতিহিংসা তোমার চেতনার
যত উদ্ভাসিত আলো রং
আকাশের মতন অকস্মাৎ নীল
নীলে ডুবে থাকা তোমার প্রিয় কোনো মুখ
তার চোখের কাছাকাছি এসে কেন পথ ভেঙে

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে
বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ...

তবু এইখানে আছে অবলীল হাওয়া
জানালা বদ্ধ ঘরে আসে যায়
দেয়াল ধরে বেড়ে ওঠে মধ্যরাত
তোমার ছায়ায় জমে এসে ভয়
আলোকে চিনে নেয় আমার অবাধ্য সাহস
ভেতরে এখন কি নেই কাপুরুষ অন্ধকার একা?

তোমাকে ঘিরে পথগুলো সব সরে যায়
রাত্রির এই একা ঘর ঝুলে আছে শূন্যের কাঁটাতারে
দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে
মিশে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ...

তবু এই দুটি কাঁটাতারে, শহরের মতো করে
ভিড়ে ভরে গেছে ঘুম আমার
অচেতন কখন বেওয়ারিশ, মাটির কাছে এসে
সময় কে এপিটাফ ভেবে হাঁটু গেড়ে বসে...
তবু এখানে বাতাস আসে দুরত্বের উৎসাহে
শরৎ জমে আছে ঠাণ্ডা ঘাসে
তোমার চোখের মাঝে দূরের একা পথ
এখানে ভাঙে না দু'টো দেশে

মেঘের দূরপথ ভেঙে বুকের গভীর অন্ধকারে
আলোর নির্বাসন স্মৃতির মতন
অবিকল স্বপ্নঘর বাঁধা স্মৃতির অন্ধ নির্জনে
সময় থেমে থাকে অনাগত যুদ্ধের বিপরীতে

এখানে সরণির লেখা নেই নাম, কোন শহীদ স্মারকে
তোমার জন্য জমা থাকে শুধু স্বপ্নঘর
জানালায় ঝুলে থাকে না শূন্যতার অবচেতন
তোমার ঘরের অন্ধ আলোয় অদেখা
এখানের নির্জন অনিকেত প্রান্তর

তবুও তোমার ভাঙা স্মৃতি, ছেঁড়া স্বপ্ন, দোমড়ানো খেলাঘর
ছেঁড়া আকাশ, ভাঙা কাঁচে
আলো আর অন্ধকার তোমার
তোমার দেয়ালে কত লেখা
মানুষের দেয়ালে দেয়াল
বেঁড়ে ওঠে কাঁটাতার
এখানে এ মহান মানচিত্রের ভাগাড়

তোমার শূন্যঘরে ভরা স্মৃতি
জড় পাথরে লেখা নাম – শহীদ স্মরণী
জানালার বাইরে ভেসে গেছে দূরের আকাশ
বিঁধে আছি সময়ের কাঁটাতারে
বিঁধে আছো ছেঁড়া আকাশের মত তুমি
তোমার স্বপ্নের দলা পাকানো
বাসি কবিতা, নষ্ট গানে
তোমার জানালার বাইরে শূন্য আকাশ
তবু অনিকেত এই প্রান্তরে

এখানে এখনও শরতের প্রচুর বাতাসে
সবুজের ঘ্রানে ভরে আছে অন্ধকার এ ঘর তোমার
দেয়ালে এখন শুধু মৃত্যুর মৃত রেখাপাত...

তোমাকে কড়া নাড়ে স্মৃতিরা, ভাঙা স্বপ্ন
ঘুমের মত নেশাময় কত
কত শিশু কত আলোর মশাল নিভে গেছে
নিভে গেছে কত অচেনা ভয়
তোমাকে এখন অপরিণত এক অচেনা স্মৃতি মনে হয়
তোমার জানালার বাইরে শূন্যে
দূরের স্বপ্নঘর, ঝুলে আছি নির্জনতায়
মৃত্যু কি অনিকেত প্রান্তর?